স্বাধীনতা আমার স্বাধীনতা #### মাহ্‌মুদুল হক ফয়েজ

তোমাকে চিনেছি ঘাতক


তোমার মুখোমুখি আমি দাঁড়িয়েছি, ঘাতক-

তোমাকে চেনার এখন যথেষ্ট বয়স হয়েছে আমার ।
আমাকে অপোক্ত অবুঝ ভেবে পায়ে পরিয়ে দিয়েছো
চলত্শক্তিহীন পাদুকা, হাতে তুলে দিয়েছো লাঠি-লজেন্স ।
আমার মেধা লাফিয়ে উঠার আগেই,
মাথায় পরিয়ে দিয়েছো
ঢাকনার মত কারুকার্য টুপি।
আমার ফুসফুস হৃৎপিন্ডে ঢেকে দিয়েছো শক্ত বর্ম ।
আমার আঙুল গুলোকে কর্মহীন নিস্ক্রিয় করার জন্য
প্রতিটি আঙ্গুলে পরিয়ে দিয়েছো চাকচিক্য আংটি ।
আমি সুসজ্জিত হয়ে নির্বোধ বালকের মতন
তোমার বৃত্তে দাঁড়িয়েছিলাম এতকাল ।
আমি আজ বুঝতে পারছি, যথেষ্ট বয়স হয়েছে আমার ।
আমার বুদ্ধির জন্ম যখন হয়নি তখন আমার পিতা
অত্যন্ত সাবলিল ভাষায় আমার উদ্দেশ্যে
লিখেছিলেন স্বাধীনতার সোনালী চিরকুট
বুক পকেটে রাখা সেই চিরকুট লক্ষ করে
তুমি খুব নিপুন নিশানায় গুলি ছুঁড়লে-
চিরকুট ফুঁড়ে গুলি বিশাল হৃৎপিন্ডে ঠেকলো ।
আমি স্পষ্ট দেখতে পাচ্ছি-
সিঁড়ি গলিয়ে আমার রক্তাক্ত পিতা
দুমড়ে মুচড়ে সিঁড়ির শেষ ধাপে এসে থামলেন-
নির্বাক নিথর-আমার কোলে-
যেখানে এসে আমি দাঁড়িয়েছিলাম,
আমার উদ্গারিত উত্থানের প্রথম সিঁড়ি-
আজ সেখান থেকে আমার শুরু ।

সিঁড়ি বেয়ে চুঁয়ে চুঁয়ে পড়ছিল গল গল গল গল করে রক্ত
আমি সে রক্ত বেয়ে পিচ্ছিল সিঁড়িতে এসে দাঁড়ালাম-
সেখানে তোমার শেষ গুলিটি শেষ লক্ষ ভেদ করে গেছে ।
তোমার মুখোমুখি আমি দাঁড়িয়েছি, ঘাতক
তোমাকে চেনার এখন যথেষ্ট বয়স হয়েছে আমার ।
সেবারের শীতে উদাম শরীরে কষ্টে অসহায় ছিলাম
তুমি আমারই শস্য ক্ষেত জ্বালিয়ে-আমাকেই উত্তাপ দিয়েছিলে ।
ক্ষুধায় অতীষ্ট হয়ে প্রাণ ওষ্ঠাগত হয়ে উঠেছিল আমার,
তুমি আমাকেই সওদা করে, বিক্রি করে
ক্ষুধা নিবারণ করে তুষ্ঠ করলে ।
আমি আমার প্রকৃতির বসন্তে এসে উপলব্ধিতিতে দেখতে পাচ্ছি-
অজীর্ণ অসুস্থ পুরোনো পাতা ঝরে
নতুন পাতাদের চঞ্চলতা-
আমি স্পষ্ট দেখতে পাচ্ছি
আমার ভিতরে আমি নিয়ত জন্ম নিচ্ছি শঙ্কাহীন উদ্দাম ।
তোমার মুখোমুখি দাঁড়িয়েছি, ঘাতক-
তোমাকে চেনার এখন যথেষ্ট বয়স হয়েছে আমার ।

সমাধি



তোমার পুষ্পিত সমাধিতে

দে'শলাই'র মতন
শরীর ঘসলে-
জ্বলে উঠে
লক্ষ্য কোটি
ঘুমানো বারুদ।


** আজ টুঙ্গিপাড়ায় বঙ্গবন্ধুর মাজারে মহামান্য রাষ্ট্রপতি ও প্রধান উপদেষ্টা পুষ্পস্তবক অর্পণ করে শ্রদ্ধা নিবেদন করেন** ।

নটের গুরু


নটের গুরু ঢোলে দিলো টোকা ;


দেশ জুড়ে রাষ্ট্র হলো

সাধু খেলো ধোঁকা।



কালোবাজার চাঙা করে

সাদা টুপি মাথে,

শয়তানীরে পকেট পুরে

তসবিহ্ নিলো হাতে।



নটের গুরু দেখতে ভারি কালো,

জগত্ জুড়ে দেখায় তারে

আঁধার রাতের আলো।



ভাজা মাছটি উল্টে দেখে

যেন কচি খোকা-

নটের গুরু ঢোলে দিলো টোকা

ভাঙার গান



ভাঙো ভাঙো ভেঙ্গে গড়ো

পর্ণোকুটির প্রাণে ধরো
সাতমহলা কি হবে ভাই
প্রাণ যদি মোর খুঁজে না পাই।

আপন ধনে সওদা করে মন মাঝি ব্যাপারি
ধান্ধাবাজে ধান্ধা করে পর ধনে পোদ্দারি \

মুষ্টিচাল


মুষ্টিচাল বাংলার গ্রামীণ জনপদের এক ঐতিহ্যবাহী প্রাচীন সংস্কৃতি। যুগযুগ ধরে গ্রামীণ নারীরা প্রতিদিনের রান্নার চাল থেকে একমুঠো চাল তুলে আলাদা হাঁড়িতে জমাকরে রাখে। পরে কখনো অভাব পড়লে অথবা প্রয়োজন পড়লে প্রতিদিনের এই জমানো চাল দিয়ে সে সংকট কাটিয়ে নেয়। প্রতিদিন এভাবে চাল তুলে রাখলে দৈনন্দিন রান্নার তেমন কোনো অসুবিধা হয় না। অবস্থাপন্ন পরিবারের গৃহিনীরা আবার সঞ্চয় করার লক্ষ্যেও মুষ্টিচাল তুলে রাখেন। তারপর সঞ্চিত চাল বিক্রি করে সংসারের নানান প্রয়োজনীয় জিনিস সংগ্রহ করেন। নারীদের উপরই ন্যস্ত থাকে পুরো সংসার। সংসারের পুরো ব্যবস্থাপনাও থাকে তাদের হাতে। পুরুষরা বহির্মুখী। প্রায়ই ঘরের খবর তাদের জানা থাকেনা। মাঝেমধ্যে সংসারে চলে টানাপোড়েন। কখনো রান্নার চালও থাকেনা ঘরে। সংসারে দুর্ভোগ পোহাতে হয় গৃহিনীদেরই। সেই দুর্ভোগ কাটানোর জন্য সতর্ক গৃহিনীরা এই ব্যবস্থাকে সুনিপুন ভাবে কাজে লাগিয়ে থাকে। বাংলার গ্রামীণ সংস্কৃতিতে মুষ্টিচাল তুলে রাখা একটি সনাতন ঐতিহ্যও বটে।মুষ্টিচালের সনাতন এই ঐতিহ্যকে কাজে লাগিয়ে নোয়াখালীর একলাশ পুর ইউনিয়নের দালানবাড়ি এলাকার একদল নারী প্রতিদিনের রান্না থেকে একমুঠো করে চাল সংগ্রহের মাধ্যমে নিজেরা স্বাবলম্বী হতে সচেষ্ট হচ্ছেন। এলাকার ২৮জন নারী নিজেরা উদ্যোগী হয়ে গড়ে তুলেছেন ‘মুষ্টিচাল মহিলা সমিতি’। একাজে সবাইকে উত্সাহ যুগিয়েছেন সে এলাকার একজন স্কুল শিক্ষিকা শাহানা কবির। তিনি নিজেই উদ্যোগী হয়ে ২০০০ সালে প্রথমে তাঁর বাড়িতে এ কাজ শুরু করেন। তাঁদের এ উদ্যোগে অনুপ্রাণিত হয়ে দেশের অনেক যায়গায় নারীরা সংগঠিত হয়ে এ ধরনের আরো উদ্যোগ গ্রহন করেছেন।বাংলার গ্রামীণ নারীদের তাদের নিজস্ব ঐতিহ্য দিয়ে সঙ্গবদ্ধ করে কোনো মহ॥ত্ কাজ করার জন্য মুষ্টিচাল ঐক্য ও শক্তির রূপক হিসাবে কাজ করতে পারে।

মুড়ি প্রকল্প


মুড়ি বাঙ্গালীর খাদ্য তালিকায় অন্যতম স্থান দখল করে আছে। মুড়ি খায়না এরকম বাঙ্গালী খুঁজে পাওয়া যাবেনা। বাংলাদেশের উপকূলীয় জেলা নোয়াখালী ভোলা বরিশালের চরাঞ্চলে উৎপন্ন বিশেষ জাতের ‘ঘিগজ’ ধানের মুড়ি এর বৈশিষ্টের জন্য বিখ্যাত। এ মুড়ির রং খুব হালকা গোলাপী আভা, দেখতে সুন্দর, খেতে মচমচে এবং সুস্বাদু। অন্যান্ন সাধারন ধানের চাল দিয়েও মুড়ি ভাজা যায়। তবে ঘিগজের মুড়িই সবার কাছে জনপ্রিয়। এ মুড়িকে ঘিরে কয়েকটি স¤প্রদায় গড়ে উঠেছে। এদের বেশীর ভাগই হিন্দু স¤প্রদায় ভূক্ত। অন্যের্ওা একাজের সঙ্গে সম্পৃক্ত রয়েছে। তবে সংখ্যায় কম। যারা মুড়ির কাজ করে তারা অধিকাংশই নারী। নারীরা বাড়িতে মুড়ি ভাজে, পুরুষরা তা বাজারে বাজারে বিক্রি করে। যুগযুগ ধরে পৈত্রিক ব্যবসা হিসাবে তারা একাজকে বেছে নিয়েছে। অতি স¤প্রতি বাজারে চাল ও জিনিষ পত্রের দাম বেড়ে যাওয়ায় এর খরচও বেড়ে যায়। এ অবস্থায় বাজার দখল করতে থাকে নিু মানের চালের মেশিনে ভাজা মুড়ি। এগুলো ভাজার সময় দেয়া হয় ইউরিয়া হাইপো ইত্যাদি ধরনের মানব দেহের জন্য অত্যন্ত ক্ষতিকর কেমিকেল। দাম সস্তা দেখে বাজারে এগুলো খুব বিক্রিও হয়। কিন্তু সনাতন পদ্ধতিতে মুড়ি ভাজার সাথে জড়িত পরিবারগুলো এ অবস্থায় বেকার হয়ে পড়ে। কয়দিন যাওয়ার পর তারা দেখলো, কাজ নাকরে বসে থাকলে না খেয়ে মরতে হবে। একসময় তারা বাড়িতে শুরু করলো নিু মানের চাল দিয়ে কেমিকেল মিশিয়ে মুড়ি ভাজা। খরচও অনেক কম। দামে সস্তা হওয়ায় ওদের মুড়ি বিক্রিও হতে লাগলো। কিন্তু কিছুদিন যেতে না যেতে তারা বুঝতে পারলো তাদের শরীরের উপর মারাত্মক ক্ষতিকর প্রভাব পড়ছে। ইতিমধ্যে অনেকের হাতে ঘা দেখা দিযেছে। মারাত্মক হাঁপানীতে আক্রান্ত হলো অনেকে। সবচেয়ে ভয়াবহ যেটি তা হলো ছয় সাত মাসে অনেক গর্ভবতীর গর্ভের সন্তান নষ্ট হয়ে গেছে। ইতিমধ্যে বিকলাঙ্গ শিশুও জন্ম লাভ করেছে। অনেকেই অসুস্থ হয়ে পড়ে। তারা বুঝতে পারলো মুড়ি ভাজতে কেমিকেলের প্রভাবে এ অবস্থার সৃষ্টি হয়েছে। এ পরিস্থিতিতে তারা এ কাজটি ছেড়ে দিতে বাধ্য হয়। অন্য কোনো কাজ তারা জানেনা। দু এক জন এদিক সেদিক কাজ করে সুবিধা করতে পারছিলোনা। অনেকে দেশ ছেড়ে চলেও যায়।এরকম পরিস্থিতিতে নোয়াখালীর চরবাটার আশিটি পরিবার নিজেরা সংগঠিত হয়ে আবার স্বাস্থ্যসম্মত ভাবে মুড়ি তৈরি করতে থাকে। কারোকাছে হাত না পেতে এরা নিজেদের উৎপাদিত পন্য বাজারজাত করতে সচেষ্ট হলো। এরা কেউ সাহায্য কিংবা অনুদানে আগ্রহী নয়। কারন ইতিমধ্যে এরা বিভিন্ন প্রতিষ্ঠান থেকে ঋণ নিয়ে আকন্ঠ নিমজ্জিত হয়ে আছে। এখন এরা এদের তৈরী পন্যের ন্যায়্য মূল্য প্রাপ্তির নিশ্চয়তা পেতে শুরু করেছে। ইতিমধ্যে ঢাকা, কুমিল্লা, চট্টগ্রামে কয়টি নিদৃষ্ট এলাকায় গ্রাহক সৃষ্টি হয়েছে। বাঙ্গালীর এই অতি জনপ্রিয খাদ্যের মানও তারা নিশ্চিত করতে সচেষ্ট রয়েছে। তাদের এই মুড়ি এখন বিদেশেও রফতানীর চিন্তা ভাবনা হচ্ছে। সবচেয়ে জরুরী বিষয় হচ্ছে এই কাজটি সম্পুর্ণ নারীদের উপরই নির্ভরশীল । তারা এখন স্বাস্থ্যসম্মত উপায়ে অত্যন্ত যতেœর সাথে ঘরে ঘরে মুড়ি ভেজে প্যাকেটজাত করছে। বাজারে এদের পন্যের চাহিদাও রয়েছে খুব। এ কাজ করতে করতে নারীরাও এখন সচেতন হয়ে উঠছে। তারা নিজেরা এখন আত্মনির্ভরশীলতার দিকে এগিয়ে যাচ্ছে।

একদিন সকাল হবে


পঞ্চ ইন্দ্রিয়ের মত পাঁচ রাস্তার মোড়ে দাঁড়িয়ে আছ,
হতবিহ্বলতায় কিংকর্তব্যবিমূঢ় !
নিশিথ যামিনি ঘোর অন্ধকার
ঘন কুয়াশায় অবগুন্ঠনে ঢাকা।
দিকচি‎‎‎‎‎হ্ণহীন বন্ধু আমার
তোমার সন্মুখে মসজিদ,
ডানে মন্দির, বাঁয়ে গীর্জা
পিছনে স্কুল আড়ে আদালত।
টেলিফোন টাওয়ারের আকাশ ছোঁয়া লাল বাতি,
আকাশে লক্ষ নক্ষত্র শুকতারা
দিগন্ত বিস্তৃত ছায়াপথ
দৃষ্টিহীন তোমার সমস্ত ভূবন।
তবু বন্ধু জেনো, একদিন সকাল হবে-
ঝাউয়ের সুউচ্চ শাখায় ঝলকাবেএকটুকরো সোনালি রোদ্দুর,
মেডিকেল স্কুলের পয়রাগুলো ডানা মেলবে আকাশে।

একদিন সকাল হবে
গীর্জায় অবিরাম বেজে যাবে ঘন্টাধ্বনি
মন্দিরে উলুধ্বনি হবে বাজবে শঙ্খ
মুয়াজ্জিন মসজিদে দিবে সুরেলা আজান।

একদিন সকাল হবে-
শহীদ মিনারের বেদী থেকে দীঘির জলের
কুয়াশার ধোঁয়া ভেঙ্গে কোর্ট চত্বরে
উড়ে যাবে দুটি ছাই রঙ মেঠো চড়ুই।

একদিন সকাল হবে-
অiদালতের রায়ে শশীকান্ত ফিরে পাবে পিতৃ ভিটা।
ফুলে ফুলে ভরে যাবে গীতা বৌদির ছেঁড়া আঁচল।
একদিন সকাল হবে-
তোমার আঁখিতারায় ঝিলমিল জ্বলে জ্বলে
হেসে উঠবে রুপালী শিশির।

বন্ধু জেনো-
একদিন সকাল হবে
একদিন সকাল হবে
একদিন সকাল হবে i

রাধা


সকাল গেলো

দুপুর গেলো
বিকেল গেলো খেলে-
সন্ধ্যা বেলা
ডাগর চোখে
চোখ রেখেছি মেলে।
স্পর্শ গেলো
কষ্ট গেলো
ক্লান্তি গেলো রাধা-
তোমার আমার
অষ্ট প্রহর
হৃদয় হলো বাঁধা।।

রঙ

রঙ দেখেছো রঙ,

শাওন রাতে
নিকষ কালো
অন্ধকারের রঙ !

রঙ দেখেছো রঙ !!

মুড়ি প্রকল্প

মুড়ি বাঙ্গালীর খাদ্য তালিকায় অন্যতম স্থান দখল করে আছে। মুড়ি খায়না এরকম বাঙ্গালী খুঁজে পাওয়া যাবেনা। বাংলাদেশের উপকূলীয় জেলা নোয়াখালী ভোলা বরিশালের চরাঞ্চলে উৎপন্ন বিশেষ জাতের ‘ঘিগজ’ ধানের মুড়ি এর বৈশিষ্টের জন্য বিখ্যাত। এ মুড়ির রং খুব হালকা গোলাপী আভা, দেখতে সুন্দর, খেতে মচমচে এবং সুস্বাদু। অন্যান্ন সাধারন ধানের চাল দিয়েও মুড়ি ভাজা যায়। তবে ঘিগজের মুড়িই সবার কাছে জনপ্রিয়। এ মুড়িকে ঘিরে কয়েকটি স¤প্রদায় গড়ে উঠেছে। এদের বেশীর ভাগই হিন্দু স¤প্রদায় ভূক্ত। অন্যের্ওা একাজের সঙ্গে সম্পৃক্ত রয়েছে। তবে সংখ্যায় কম। যারা মুড়ির কাজ করে তারা অধিকাংশই নারী। নারীরা বাড়িতে মুড়ি ভাজে, পুরুষরা তা বাজারে বাজারে বিক্রি করে। যুগযুগ ধরে পৈত্রিক ব্যবসা হিসাবে তারা একাজকে বেছে নিয়েছে। অতি স¤প্রতি বাজারে চাল ও জিনিষ পত্রের দাম বেড়ে যাওয়ায় এর খরচও বেড়ে যায়। এ অবস্থায় বাজার দখল করতে থাকে নিু মানের চালের মেশিনে ভাজা মুড়ি। এগুলো ভাজার সময় দেয়া হয় ইউরিয়া হাইপো ইত্যাদি ধরনের মানব দেহের জন্য অত্যন্ত ক্ষতিকর কেমিকেল। দাম সস্তা দেখে বাজারে এগুলো খুব বিক্রিও হয়। কিন্তু সনাতন পদ্ধতিতে মুড়ি ভাজার সাথে জড়িত পরিবারগুলো এ অবস্থায় বেকার হয়ে পড়ে। কয়দিন যাওয়ার পর তারা দেখলো, কাজ নাকরে বসে থাকলে না খেয়ে মরতে হবে। একসময় তারা বাড়িতে শুরু করলো নিু মানের চাল দিয়ে কেমিকেল মিশিয়ে মুড়ি ভাজা। খরচও অনেক কম। দামে সস্তা হওয়ায় ওদের মুড়ি বিক্রিও হতে লাগলো। কিন্তু কিছুদিন যেতে না যেতে তারা বুঝতে পারলো তাদের শরীরের উপর মারাত্মক ক্ষতিকর প্রভাব পড়ছে। ইতিমধ্যে অনেকের হাতে ঘা দেখা দিযেছে। মারাত্মক হাঁপানীতে আক্রান্ত হলো অনেকে। সবচেয়ে ভয়াবহ যেটি তা হলো ছয় সাত মাসে অনেক গর্ভবতীর গর্ভের সন্তান নষ্ট হয়ে গেছে। ইতিমধ্যে বিকলাঙ্গ শিশুও জন্ম লাভ করেছে। অনেকেই অসুস্থ হয়ে পড়ে। তারা বুঝতে পারলো মুড়ি ভাজতে কেমিকেলের প্রভাবে এ অবস্থার সৃষ্টি হয়েছে। এ পরিস্থিতিতে তারা এ কাজটি ছেড়ে দিতে বাধ্য হয়। অন্য কোনো কাজ তারা জানেনা। দু এক জন এদিক সেদিক কাজ করে সুবিধা করতে পারছিলোনা। অনেকে দেশ ছেড়ে চলেও যায়। এরকম পরিস্থিতিতে নোয়াখালীর চরবাটার আশিটি পরিবার নিজেরা সংগঠিত হয়ে আবার স্বাস্থ্যসম্মত ভাবে মুড়ি তৈরি করতে থাকে। কারোকাছে হাত না পেতে এরা নিজেদের উৎপাদিত পন্য বাজারজাত করতে সচেষ্ট হলো। এরা কেউ সাহায্য কিংবা অনুদানে আগ্রহী নয়। কারন ইতিমধ্যে এরা বিভিন্ন প্রতিষ্ঠান থেকে ঋণ নিয়ে আকন্ঠ নিমজ্জিত হয়ে আছে। এখন এরা এদের তৈরী পন্যের ন্যায়্য মূল্য প্রাপ্তির নিশ্চয়তা পেতে শুরু করেছে। ইতিমধ্যে ঢাকা, কুমিল্লা, চট্টগ্রামে কয়টি নিদৃষ্ট এলাকায় গ্রাহক সৃষ্টি হয়েছে। বাঙ্গালীর এই অতি জনপ্রিয খাদ্যের মানও তারা নিশ্চিত করতে সচেষ্ট রয়েছে। তাদের এই মুড়ি এখন বিদেশেও রফতানীর চিন্তা ভাবনা হচ্ছে। সবচেয়ে জরুরী বিষয় হচ্ছে এই কাজটি সম্পুর্ণ নারীদের উপরই নির্ভরশীল । তারা এখন স্বাস্থ্যসম্মত উপায়ে অত্যন্ত যতেœর সাথে ঘরে ঘরে মুড়ি ভেজে প্যাকেটজাত করছে। বাজারে এদের পন্যের চাহিদাও রয়েছে খুব। এ কাজ করতে করতে নারীরাও এখন সচেতন হয়ে উঠছে। তারা নিজেরা এখন আত্মনির্ভরশীলতার দিকে এগিয়ে যাচ্ছের্র্